ইতিহাস

নাটোর পৌরসভার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

অবিভক্ত বাংলায় নাটোর একটি প্রাচীন জনপদ, পদ্মা নদীর শাখা নারোদ নদের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত এই জনপদের নামকরনের সাথে জড়িয়ে আছে নানা কিংবদন্তী, রাজ-রাজন্যের আবাসস্থল বৃটিশদের বিরুদ্ধে রাণী ভবণীর অবস্থান সমৃদ্ধ এই নাটোর।

১৮৬৪ সালে ‘মিউনিসিপ্যাল’ উন্নয়ন আইন নামে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়, এই আইন অনুসারে সরকার মনোনীত ৭ জন স্থায়ী বাসিন্দাকে মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনার ও ৭ জন সরকার মনোনীত কর্মকর্তা নিয়ে মিউনিসিপ্যালিটি পরিচালনার বিধান রাখা হয়। তখন পৌরসভার স্থানীয় অধিবাসীদের ভোটের মাধ্যমে সদস্য নির্বাচনের কোন ব্যবস্থা ছিলনা। সকল সদস্যই মনোনীত হতেন সরকার কর্তৃক। এই আইন চালু করার সঙ্গে সঙ্গে নাটোরের রাজা আনন্দনাথ রায়ও শহরের অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ নাটোরে একটি মিউনিসিপ্যালিটি স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে আবেদনপত্র পেশ করেন ফলে নাটোর ও তার পার্শ্ববর্তী কিছু গ্রাম মিউনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া হিসাবে শহর এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়।

এ দিকে ১৮৬৮ সালের ১৬ অক্টোবর নাটোর প্রবল কলেরার কবলে পড়ে এবং দু’মাস স্থায়ী এই মহামারীতে ৬১৩ জন মারা যায় ঐ অবস্থায় তৎকালীন নাটোরের রাজা চন্দ্রনাথ রায় নাটোর শহরে একটি মিউনিসিপ্যালিটি বা পৌরসংস্থা স্থাপনের জন্য আগ্রহী হন এবং তাঁরই আন্তরিক প্রচেষ্টায় ১ এপ্রিল ১৮৬৯ সালে স্থাপিত হয় নাটোর পৌরসভা । তখন নাটোর পৌরসভায় জনসংখ্যা ছিল ৮৩১৮ জন। হিন্দু ছিল ৫০১১ জন, মুসলমান ৩২৯৪ জন এবং ভোটার সংখ্যা ছিল ৬৩৬ জন। নাটোর পৌরসভা ২৪.৬  উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে নারদ নদের তীরে অবস্থিত। তখন কাঁঠালবাড়িয়া, কানাইখালী, আলাইপুর, বড়গাছা এবং কান্দিভিটা পৌর এলাকার অন্তর্ভূক্ত ছিল। পরে এর সঙ্গে যুক্ত করা হল তৎকালীন কামারখালী, সিজাইল, বাটকামারী, দূর্গাপুর, কোরাপাড়া কৃষ্টপুর প্রভৃতি গ্রামকে। তারপর সীমা নির্দিষ্ট করা হয় দক্ষিণে রেললাইনও বজরাখা, উত্তরে গদাই নদী পূর্বে নীল গরিয়া বিলও সরকারি রাস্তা এবং পশ্চিমে বড়াল নদীর খাল।

এই নাটোর পৌর পরিষদের নির্বাচিত সভা ছিলেন (১) কুমুদ নাথ রায় (নাটোর ছোট তরফ) (২) মোঃ রশিদ আলী খান চৌধুরী(৩) মোঃ ফৌজুলা রহমান খান (৪) কৃষ্ণ প্রসাদ শুকুল (৫) শীতল চন্দ্র কুন্ডু (৬) কৃষ্ণ মোহন মজুমদার (৭) চন্দ্রনাথ ভদ্র ও সরকার মনোনীত ৭ জন ১৮৮৩-৮৪ সালে পৌর প্রতিষ্ঠানে লাইসেন্স প্রাপ্ত গাড়ির সংখ্যা (টমটম, গরুগাড়ি) ৮৬৫টি। ১৮৮৫ সনে নাটোর পৌর করের প্রবর্তন করা হয়। করের পরিমাণ ছিল সর্ব নিম্ন ১ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৮৪। বর্তমানে লাইসেন্স প্রাপ্ত রিক্সার সংখ্যা ৪০০০টির বেশি এবং সর্বনিম্ন পৌরকর ৮.১২ টাকা এবং সর্বোচ্চ পৌরকর ১ লক্ষাধিক।

একটি বিল্ডিং এ(বর্তমান আধুনিক সদর হাসপাতাল) পরিবর্তিতে এর অস্থায়ী অফিস হিসাবে পিলখানায় একটি বাড়ি ব্যবহৃত হয়েছে। ১৯৪৩ সালে নাটোর পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান বাবু গোপেন্দ্র প্রসাদ শুকুল মিউনিসিপ্যালিটির স্থায়ী অফিস করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং তাঁরই প্রচেষ্টায় ১৯৪৩ সালে একটি ভবন নির্মান করেন। ১৯৪৩ সালের ২৩ মার্চ তৎকালীন বাংলার গভর্নর স্যার জন হারবার্ট বর্তমান পৌর কার্যালয়ে এই পৌর অফিসের শুভ উদ্বোধন করেন।

কবির কল্পনায় আঁকা বনলতা সেনের এই জনপদটি ১৮৬৯ সালে মিউনিসিপ্যালিটির মর্যাদা লাভ করে। এই মিউনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর জন্য প্রথম দিকে স্থায়ী কোন ভবন ছিল না। অস্থায়ীভাবে প্রথম দিকে কাজ চলত নারোদ নদের দক্ষিনে কোট ভবনের একটি বিল্ডিং এ। (বর্তমানে অধুনিক সদর হাসপাতাল)। পরবর্তীতে এর অস্থায়ী অফিস হিসাবে পিলখানায় একটি বাড়ী ব্যবহৃত হয়েছে।

১৯৪৩ সালে নাটোর পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান বাবু গোপেন্দ্র প্রসাদ শুকুল মিউনিসিপ্যালিটির স্থায়ী অফিস করার উদ্দ্যোগ গ্রহন করেন এবং তাঁরই প্রচেষ্টায় এই ভবন নির্মান করেন। ১৯৪৩ সালের ২৩মার্চ তৎকালীন বাংলার গর্ভনর স্যারজন হারবাট বর্তমান পৌর কার্যালয়ের এই অফিসের শুভ উদ্বোধন করেন। ১৯৯৯ সনে নাটোর পৌরসভা ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভার মর্যাদা লাভ করে।